বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ (৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম, ৯ম, ১০ম ) | সকল শ্রেণির জন্য

বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ
বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক, আশা করি সবাই ভাল আছেন। আপনি কি বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? বা বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ লেখার নিয়ম জানতে চান? তাহলে একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন আজকের নিবন্ধে আমরা বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ ২০২৪ নিয়ে আলোচনা করব। তাই আশা করব সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করি। 

বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ কেন প্রয়োজন জেনে নেই

বিভিন্ন পরীক্ষায় এবং প্রতিযোগিতায় বিজয়মালা অনুচ্ছেদ এসে থাকে। তখন আমাদের বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ লেখার প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা কিভাবে বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ লিখতে হয়। অনেকেই জানিনা কিভাবে বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ লিখলে ভালো মার্ক পাওয়া যায়। 

আর তাদের জন্যই আজকের পোস্টটি লেখা হয়েছে, যদি আজকের এই পোস্টটি আপনি পড়েন তাহলে বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ লেখায় আশা করছি ভালো মার্ক অর্জন করতে পারবেন পরীক্ষাতে এবং প্রতিযোগিতায় সেরা হতে পারবেন। 

তা হলে চলুন বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ দেখার আগে আমরা বিজয় দিবস অনুচ্ছেদের লেখার নিয়ম গুলো জেনে নেই। 

বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ লেখার নিয়মাবলী

  • বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ বা রচনা লেখার শুরুতে অনুচ্ছেদের নাম বা টাইটেল লেখা।
  • অনুচ্ছেদ বা রচনা পয়েন্ট আকারে লিখলে ভালো মার্ক পাওয়া যায়।
  • প্রথমে ভূমিকা বা সূচনা দিয়ে শুরু করা।
  • বিজয় দিবস সম্পর্কে পয়েন্ট আকারে সম্পূর্ণ ঘটনা এবং তথ্যগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরার চেষ্টা করা।
  • বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ রচনা শেষে উপসংহার দিয়ে শেষ করা।
  • হাতের লেখার দিকে মনোযোগ দেওয়া এবং মার্জিন টানা।
  • শুধুমাত্র কালো রঙের কলম অথবা পয়েন্ট গুলো লেখার জন্য হালকা নীল বা বেগুনি কালার ব্যবহার করা যেতে পারে।


বিজয় দিবস রচনা ২০২৪

ভূমিকাঃ ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয় এবং দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি অর্জন করে স্বাধীনতা। অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাঙালির জাতির জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ দিবস। 

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকেই বাঙালি বিশ্বের বুকে স্বাধীন পরিচয় লাভ করে। তারপর থেকে ১৬ই ডিসেম্বর এই দিনটিকে বিজয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রতিবছর সরকারিভাবে সবাই মিলে উদযাপন করে থাকে। 

মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের জন্য শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বিজয় দিবসের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের নিকট তুলে ধরার উদ্দেশ্যে প্রতিবছর ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস অনুষ্ঠান পালন করা হয়। 

বিজয় দিবসের তাৎপর্যঃ দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি অর্জন করে এই মহান বিজয়। 1971 সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা যৌথবাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করে। 

ঐদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের এই বিজয় শুধুমাত্র স্বাধীন ভূখণ্ড এবং পতাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং বিজয় দিবসের তাৎপর্য সুদূর প্রসারিত। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মধ্য দিয়ে অত্যাচারিত, অবহেলিত জাতি অর্জন করেছে নতুন এক সম্ভাবনার সুযোগ। বিজয় দিবসের তাৎপর্য মহান।

বিজয় দিবসের পটভূমিঃ যুগ যুগ ধরে বাঙালি জাতি ছিল নির্যাতিত জাতি। কুলি-মজুর থেকে শুরু করে শিক্ষক, সাহিত্যিক, কবিগুরু সবাই ছিল অত্যাচারিত, নির্যাতিত। ইংরেজরা বাঙ্গালীদের উপর নির্মম নির্যাতন চালাত। নানা সময়ে নানা হুকুম জারি করতো যা ছিল বাঙালি জাতির পক্ষে মেনে নেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য। কিন্তু কেউ রুখে দাঁড়াবার মতো সাহস পায়নি সরকারের বিরুদ্ধে। 

যারাই প্রতিবাদ করতে চেয়েছিল তাদেরকেই নির্মম নির্যাতন করে মৃত্যুমুখী করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন খুবই সাহসী, চতুর এবং নেতৃত্ব দানে পটু একজন লোক। 

তার হাত ধরেই সমস্ত বাঙালি অর্থাৎ সকল শ্রেণীর মানুষই একতাবদ্ধ হয়েছিল। যার কারণেই বাঙালি নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে রুখে দিতে সফল হয়েছিল। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দীর্ঘকাল ধরেই বাঙ্গালীকে শাসন করে যাচ্ছিল। 

বাঙালির মাতৃভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল। অগণিত শিক্ষার্থী হত্যা করেছিল। নারী নির্যাতন সহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষদেরকেই নির্যাতিত হতে হতো এই হানাদার বাহিনীর কাছে। কিন্তু শেষমেষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে বাঙালি জাতি এক হয়ে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা করে এবং একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করে। 

1971 সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাঙালি জাতি পায়ে এক সার্বভৌম খন্ড। এরপর থেকে বাঙালি জাতি সমগ্র বিশ্বের কাছে প্রশংসিত জাতি হিসেবে, স্বাধীন জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে বাঁচতে শুরু করে। স্বাধীন বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনভাবে বাঁচতে শুরু করে। সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট জয়, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রেরণ সহ আরো অনেক সাফল্য অর্জন করে বাঙালি। 

কিন্তু বাঙালি জাতির নিকট এক দুঃখের দিন সেটি হচ্ছে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্বিচারে হত্যা করে কিছু দেশদ্রোহী সেনাবাহিনীর একদল সদস্যরা। হয়তো বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ আরও উন্নত হতে পারত। 


বিজয় দিবস উদযাপনঃ ১৬ই ডিসেম্বর বছরের একটি অন্যতম দিন বাঙালি জাতির জীবনে। প্রতিবছর এই দিনে বাঙালি বিজয় দিবস উদযাপন করে থাকে। বিজয় দিবস উদযাপনের জন্য প্রতিটি জেলা এবং শহর অঞ্চলে স্টেডিয়াম অথবা খেলার মাঠে বিজয় দিবস উপলক্ষে কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করা হয়। 

এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ক্রিয়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে বিজয়মেলা বসে থাকে। বিজয় মেলায় সকলে ঘুরতে যায় এবং বিভিন্ন জিনিস কিনতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন তথ্যচিত্র এবং মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে বাচ্চারা জানতে পারে বিজয় মেলা থেকে। 

এছাড়াও বিজয় দিবস উদযাপন করতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান করে থাকে। বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধের শহীদ হওয়া বীর সেনাদের প্রতি এবং সকল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়। এছাড়াও বিজয় দিবসের তাৎপর্য এবং স্মৃতি ধরে রাখতে সন্ধার পরে বাংলা কনসার্ট এবং বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। 


বিজয় দিবসে আমাদের কর্তব্যঃ বিজয় দিবসে আমাদের অনেক কর্তব্য রয়েছে। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি অর্জন করেছে মহান বিজয় দিবস। তাদের এই মহান আত্মত্যাগ এবং দেশপ্রেম সম্পর্কে আমাদের নতুন প্রজন্মকে আমাদের জানাতে হবে। 

বিভিন্ন কার্যকলাপ এর মাধ্যমে বিজয় দিবস এর তাৎপর্য সকলের মাঝে তুলে ধরতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ নিয়ে দেশ ও জাতির উন্নয়নে অগ্রসর হতে হবে। আমাদেরকে দেশপ্রেমী হয়ে উঠতে হবে। দেশের ক্ষতি হয় এমন কোন কাজ করা যাবে না। অন্যায়ের প্রতিরোধ এবং ভালো কাজের প্রশংসা করতে হবে।


উপসংহারঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং নির্বিশেষে সকল বাঙালির নিরন্তর প্রচেষ্টার ফসল আজকের এই স্বাধীন সার্বভৌম ভূখণ্ড এবং বিজয় দিবস। নতুন প্রজন্ম হিসেবে আমাদের উচিত বিজয় দিবসের এই চেতনা বুকে লালন করে দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণের কথা চিন্তা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। 

মুক্তিযুদ্ধে যাদের অবদান এবং যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তাদের বীরগাথা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা। বাঙালি জাতির নিকট এক বিশেষ দিন হচ্ছে ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস।

বিজয় দিবস রচনা পিডিএফ 

বিজয় দিবস রচনা পিডিএফ
বিজয় দিবস রচনা পিডিএফ

প্রিয় শিক্ষার্থীরা আপনারা যদি বিজয় দিবস রচনার পিডিএফ পেতে চান তাহলে নিচের দেওয়া ছবিটি স্ক্রিনশট নিয়ে হতে পারেন অথবা ছবিতে যে অংশটুকু বাকি রয়েছে সেই অংশটুকু এই পোস্ট থেকে আপনারা স্ক্রিনশট দিয়ে রাখতে পারেন। অথবা আপনি যখন রচনাটি লিখবেন তখন এই ওয়েবসাইট থেকে দেখে লিখতে পারবেন।

সর্বশেষ কথা

প্রিয় পাঠক আশা করি বিজয় দিবস অনুচ্ছেদ টি আপনারা পেয়ে গেছেন। আজকের পোস্টটি যদি আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার সোশ্যাল মিডিয়া অথবা গ্রুপে শেয়ার করে অন্যদের দেখার সুযোগ করে দিবেন। আজকের পোস্ট সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। মুক্তিযুদ্ধের সম্পর্কে আপনার মনোভাব কি বা একটি মন্তব্য করে যাবেন। নিয়মিত আপডেট পোস্ট পেতে ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট, সকলের সার্বিক মঙ্গল কামনা করে শেষ করছি, আল্লাহ হাফেজ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
Facebook Page
telegram
প্রিমিয়াম সাজেশন গ্রুপ [9 to 12]

আপনি যদি নবম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে নিচের দেওয়া গ্রুপে জয়েন করুন। এই গ্রুপে সকল প্রিমিয়াম সাজেশন এবং নোট পেয়ে যাবেন। আশা করি আপনার পরীক্ষায় অনেক উপকার হবে।

গ্রুপ : এখানে ক্লিক করুন